রবিবার, জুলাই ১৩, ২০২৫
 শিরোনাম
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিতীয় দফার শুল্ক আলোচনা অব্যাহত থাকবে চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্য বন্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে : আইজিপি দেশের চলমান উন্নয়নের ধারা টেকসই করতে প্রচুর গাছ লাগাতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণে সরকার সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততার কথা ভাবছে : উপদেষ্টা ফারুক ই আজম ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক নিহত সিরাজগঞ্জে যমুনায় বাড়ছে পানি, বিপাকে নদী পাড়ের মানুষ মিটফোর্ডের ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন ৫ জন গ্রেপ্তার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ঢাবিতে কনসার্ট ও ড্রোন শো গৌরবময় অবদানের জন্য কোস্টগার্ডকে স্বীকৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ডিএসসিসি’র মাসব্যাপী পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান

নেপালে ১৪৮ জনের মৃত্যু ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায়

নেপালে ১৪৮ জনের মৃত্যু ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায়

নেপালের বন্যা কবলিত রাজধানীর বাসিন্দারা কাদায় ঢাকা বাড়িগুলোতে ফিরে আসতে শুরু করেছে। দেশটিতে এই দুর্যোগে কমপক্ষে ১৪৮ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে এবং রোববার ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয় শুরু হয়েছে।
জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষা মৌসুমে দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা এবং ভূমিধস স্বাভাবিক ঘটনা, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন জলবায়ু পরিবর্তন বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়াচ্ছে।
রাজধানী কাঠমান্ডুর মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোতে আকস্মিক বন্যা এবং শহরটিকে নেপালের বাকি অংশের সঙ্গে সংযোগকারী মহাসড়কগুলো ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি সপ্তাহ শেষে কাঠমান্ডুর পুরো এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়।
নদীর তীরবর্তী একটি এলাকায় বসবাসকারী ৪০ বছর বয়সের কুমার তামাং এএফপিকে বলেন, শনিবার মধ্যরাতের পর তার ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় পরিবারসহ তাকে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছিল। ‘আজ সকালে আমরা ফিরে এসেছি এবং সবকিছু অন্যরকম দেখাচ্ছে।’
তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের বাড়ির দরজাও খুলতে পারিনি, কাদায় আবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। গতকাল আমরা ভয় পেয়েছিলাম যে বন্যার পানিতে আমাদের জীবন যাবে, কিন্তু আজ আমাদের কাছে পরিষ্কার করার মতো পানি নেই।
নেপালের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অথরিটি জানিয়েছে, সারা দেশে ১৪৮ জন নিহত হয়েছে এবং আরও ৫৯ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঋষি রাম তিওয়ারি এএফপিকে বলেন, কাঠমান্ডুকে দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ধ্বংসাবশেষে অবরুদ্ধ বেশ কয়েকটি হাইওয়ে পরিষ্কার করতে বুলডোজার ব্যবহার করা হচ্ছে। তিন হাজারেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
নেপাল পুলিশের মুখপাত্র ড্যান বাহাদুর কারকি এএফপিকে জানান, নিহতদের মধ্যে অন্তত তিনটি গাড়িতে ৩৬ জন আরোহী ছিলেন এবং কাঠমান্ডুর দক্ষিণে একটি হাইওয়েতে ভূমিধসের ফলে তারা মাটি চাপা পড়ে মারা যায়।
দেশটির আবহাওয়া ব্যুরো কাঠমান্ডু পোস্টকে জানিয়েছে, রাজধানী যে উপত্যকায় মধ্যে সেখানে শনিবার সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টায় ২৪০ মিলিমিটার (৯.৪ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত ১৯৭০ সালের পর এটি কাঠমান্ডুতে রেকর্ড করা সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ছিল।
কাঠমান্ডুর মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া বাগমতী নদী এবং এর অসংখ্য শাখা নদী শনিবার মধ্যরাতের পর তীর ভেঙে আশেপাশের বাড়িঘর ও যানবাহন প্লাবিত করে।
উঁচু স্থানে উঠতে বুক সমান পানি পেরিয়ে আসতে হিমশিম খেতে হয় বাসিন্দাদের। কাঠমান্ডুর আরেকটি প্লাবিত এলাকায় বসবাসকারী বিষ্ণু মায়া শ্রেষ্ঠা জানান, বাঁচার জন্য তাদের বাড়ির ছাদে উঠতে হয়েছে।
শ্রেষ্ঠা এএফপিকে বলেন, আমরা নিরাপত্তার জন্য এক ছাদ থেকে অন্য ছাদে লাফ দিয়েছিলাম এবং অবশেষে উদ্ধারকারীরা আমাদের উদ্ধার করতে নৌকা নিয়ে এসেছিল।
হেলিকপ্টার ও স্পিডবোটের সাহায্যে উদ্ধারকাজে সহায়তার জন্য তিন হাজারের বেশি নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। উদ্ধারকারী দলগুলো র‌্যাফট ব্যবহার করে জীবিতদের নিরাপদে টেনে নিচ্ছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ১৫০ টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করার পরে রোববার সকালের মধ্যে কাঠমান্ডুতে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলো চলাচল আবার শুরু হয়েছে।
গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ এশিয়ায় বার্ষিক বৃষ্টিপাত ৭০-৮০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
এ বছর বৃষ্টিপাতের কারণে নেপালে ২৬০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে।