জাস্টিন গ্রেভসের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বড় সংগ্রহ পেয়েছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৯ উইকেটে ৪৫০ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে ক্যারিবীয়রা। জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ২০ ওভারে ২ উইকেটে ৪০ রান করেছে বাংলাদেশ।
এন্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে প্রথম দিন শেষে ৮৪ ওভারে ৫ উইকেটে ২৫০ রান করেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জাস্টিন গ্রেভস ১১ ও জশুয়া ডা সিলভা ১৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দিনের পঞ্চম বলেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন পেসার হাসান মাহমুদ। ডা সিলভাকে ১৪ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ পেসারদের মধ্যে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড গড়লেন হাসান। এতে ভেঙে গেছে পেসার শাহাদাত হোসেনের নজির। ২০০৮ সালে ১৪ ইনিংসে ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন শাহাদাত। আর এ বছর এখন পর্যন্ত ১৩ ইনিংসে ২৪ উইকেট নিয়েছেন গত মে মাসে শ্রীলংকার বিপক্ষে অভিষেক হওয়া হাসান।
দিনের দ্বিতীয় ওভারেও উইকেটের দেখা পান হাসান। গালিতে জাকির হাসানের দারুণ ক্যাচে ৪ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরেন আলজারি জোসেফ।
২৬১ রানে সপ্তম উইকেট পতনের পর বাংলাদেশের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন গ্রেভস ও কেমার রোচ। ১৪২ বলে ৭৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যান তারা। এসময় ৮৮ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি করেন গ্রেভস।
বিরতির পর বাংলাদেশের ভুলে ব্যক্তিগত ৭৭ রানে জীবন পান গ্রেভস। তাসকিনের করা ১১৯তম ওভারে গ্রেভসের ব্যাটের কানায় লেগে বল জমা পড়ে বাংলাদেশের বদলি উইকেটরক্ষক জাকের আলির হাতে। কিন্তু আউটের কোন আবেদন করেনি বাংলাদেশ। টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে আউট ছিলেন গ্রেভস।
গ্রেভস সেঞ্চুরি ও রোচ হাফ-সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু রোচকে দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড করে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন হাসান। ১৪৪ বলে ২টি চারে ৪৭ রান করেন রোচ। ২৮৯ বল খেলে ১৪০ রানের জুটি গড়েন গ্রেভস ও রোচ। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে অষ্টম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়লেন তারা।
ম্যাচের প্রথম দিন মিখাইল লুইস ও আলিক আথানেজ নব্বইয়ের ঘরে থামলেও ভুল করেননি গ্রেভস। রোচকে হারানোর পর ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ নেন গ্রেভস।
১৮১ বলে প্রথম শতকের স্বাদ নেওয়ার পর নবম উইকেটে জেইডেন সিলেসকে নিয়ে ৪৮ বলে ৩৭ রান যোগ করেন গ্রেভস। সিলেসকে ১৮ রানে আউট করেন মিরাজ। শেষ উইকেটে গ্রেভস ও শামার জোসেফ ১২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ার পর ইনিংস ঘোষণা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
৩৭৪ মিনিটে ৪টি চারে ২০৬ বলে ১১৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন গ্রেভস। ৮ বলে ২টি বাউন্ডারিতে অপরাজিত ১১ রান করেন শামার।
হাসান ৮৭ রানে ৩টি, তাসকিন ৭৬ রানে ও মিরাজ ৯৯ রানে ২টি করে এবং তাইজুল ১১১ রানে ১টি উইকেট নেন। ৫৩ রান দিয়েও উইকেটের দেখা পাননি শরিফুল ইসলাম।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও জাকির হাসান। ৯ ওভারে ১২ রান তুলেন তারা। নবম ওভারের পঞ্চম বলে ব্যক্তিগত ৫ রানে জীবন পান জয়। আলজারি জোসেফের বলে গালিতে জয়ের ক্যাচ ফেলেন লুইস।
তবে পরের ওভারে দলীয় ২০ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সিলেসের করা ঐ ওভারে দু’টি চার মারার পর বোল্ড হন জাকির। ব্যাটের নিচের কানায় লেগে বল স্টাম্প ভাঙে। ৩৪ বলে ৩টি চারে ১৫ রান করেন তিনি।
জাকির ফেরার পরের ওভারে সাজঘরে ফিরেন জয়ও। আলজারির বলে দ্বিতীয় স্লিপে আথানাজেকে ক্যাচ দেন ৩৩ বলে ৫ রান করা জয়।
২১ রানে দুই উইকেট পতনের পর জুটি বাঁধেন মোমিনুল হক ও শাহাদাত হোসেন। তৃতীয় উইকেটে ৫৪ বলে ১৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন শেষ করেছেন তারা। মোমিনুল ৭ ও শাহাদাত ১০ রানে অপরাজিত আছেন। সিলেস ও আলজারি ১টি করে উইকেট নেন।