শনিবার, নভেম্বর ৮, ২০২৫
 শিরোনাম
ভোটকেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থা জানতে চেয়েছে ইসি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে নবম দিনের শুনানি চলছে আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্ত বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে ডুরান্ড লাইন সোনাদিয়া দ্বীপের জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে ৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার প্রকল্প মধ্য এশিয়ার নেতাদের সঙ্গে প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে বসছেন ট্রাম্প বাংলাদেশের পুলিশ সংস্কারে সহায়তা দেবে আয়ারল্যান্ড প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ: ১০,২১৯টি শূন্য পদে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ বাংলাদেশের প্রথম ‘ফরেস্ট মিউজিয়াম’ এখন লালমাই পাহাড়ে জামালপুরে কৃষি প্রণোদনা পাচ্ছেন ৩৮ হাজার কৃষক জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪তম সভা সম্পন্ন

যৌতুক মামলায় স্ত্রী কারাগারে বন্দি

যৌতুক মামলায় স্ত্রী কারাগারে বন্দি

স্বামীর দায়ের করা যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারার মামলায় স্ত্রীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন চাঁদপুরের শাহরাস্তির আমলি আদালত। মঙ্গলবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তন্ময় কুমার দে এ আদেশ দেন।

মামলার আসামি কামরুন নাহার (৩২) শাহরাস্তি উপজেলার বেরনাইয়া গ্রামের মজিবুর রহমানের স্ত্রী। তার স্বামী মজিবুর রহমান ২০ জুলাই সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনের মামলা দায়ের করেন।

শাহরাস্তির আমলি আদালতের বিচারক তন্ময় কুমার দে এ মামলায় গত ২১ আগস্ট কামরুন নাহারের বিরুদ্ধে সমন দেন। সমন জারির পরেও আসামি আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় বিগত ৫ অক্টোবর বিচারক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এরপর শাহরাস্তি থানা পুলিশ আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে কামরুন নাহারের অবস্থান নির্ণয় করে ৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় শাহরাস্তির কালীবাড়ি এলাকা থেকে তাকে আটক করে। পুলিশ মঙ্গলবার আসামিকে আদালতে প্রেরণ করেন। কামরুন নাহার আদালতে জামিন চাইতে গেলে বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন চাঁদপুর বারের মোহাম্মদ সাইফুল মোল্লা।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২৪ সালের ১৯ জুন শাহরাস্তি উপজেলার উল্লাশ্বর গ্রামের আবুল কালামের কন্যা কামরুন নাহারের সঙ্গে একই উপজেলার বেরনাইয়া গ্রামের আবুল কাশেমের পুত্র মজিবুর রহমানকে ২ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মজিবুর রহমান ও তার অভিভাবকরা কামরুন নাহারকে প্রায় ৪ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার দেন এবং মেহমানদারি করাতে আড়াই লাখ টাকা খরচ করেন। বিয়ের পর থেকেই স্ত্রী কামরুন নাহার তার স্বামীকে নগদ অর্থ, জমিজমা লিখে দিতে ও শহরে তার নামে ফ্ল্যাট কিনে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।

কামরুন নাহার সুকৌশলে তার স্বামী মজিবুর রহমানের কাছ থেকে ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট ১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা এবং চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত প্রয়োজনের কথা বলে ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকারে নেন; কিন্তু সেই টাকা আর ফেরত দেননি।

স্ত্রী কামরুর নাহার বিভিন্নজনের সঙ্গে পরকীয়ায় আসক্ত ছিলেন। সারাক্ষণ মোবাইলের ইমোতে ও হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনে ব্যস্ত থাকতেন। কামরুন নাহার বিয়ের সময় তার স্বামীকে আগে একটি বিয়ে হয়েছে বললেও তার স্বামী জানতে পারেন যে, ইতোপূর্বে তার স্ত্রীর তিনটি বিয়ে হয়েছে। স্ত্রী কামরুন নাহার ১০ শতাংশ জায়গা, তার স্বামীর দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার নিজ নামে লিখে দিতে ও শহরে একটি ফ্ল্যাট যৌতুক হিসেবে কিনে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। এ নিয়ে সংসারে চলতে থাকে চরম পর্যায়ের দাম্পত্য কলহ।

ব্যবসায়িক কাজে রাখা স্বামীর আড়াই লাখ টাকা নিয়ে কাউকে না বলে তিনি বাপের বাড়ি চলে যান। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করলেও স্ত্রী কামরুন নাহার সবাইকে গালাগালি করেন এবং কাউকে পাত্তা দেননি।

চাঁদপুর বারের সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ সাইফুল মোল্লা বলেন, যৌতুক নিরোধ আইন ২০১৮-এর ৩ ধারায় যদি বিয়ের কোনো একপক্ষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিয়ের অন্য কোনো পক্ষের নিকট কোনো যৌতুক দাবি করেন, তাহলে সেটি হবে এই আইনের অধীন একটি অপরাধ এবং তজ্জন্যে তিনি অনধিক পাঁচ বছর কিংবা অন্যূন এক বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন। স্ত্রী যদি যৌতুক দাবি করে, তাহলে স্ত্রীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দায়ের করতে কোনো আইনি বাধা নেই। আমরা তাই করেছি। আদালত আমাদের মামলা আমলে নিয়েছেন।