সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ঘুষ বাণিজ্য ও দুর্নীতি বন্ধসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে অধিদপ্তরের ক্ষতিগ্রস্ত ঠিকাদার সমন্বয় কমিটি। রবিবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর স্মারকলিপি দেয় এই সমন্বয় কমিটি। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত চলমান কাজ বন্ধ রাখা এবং ৩ কর্ম দিবসের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখা না হলে চতুর্থ কার্যদিবস থেকে সড়ক ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের ক্ষতিগ্রস্ত ঠিকাদার সমন্বয় কমিটি।
দেশের ৪৭টি পেশাদার ঠিকাদার কোম্পানি এই সমন্বয় কমিটির সদস্য। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- রিলাইবল বিল্ডার্স লিমিটেড, ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, মেসার্স সালেহ আহমেদ, মাসুদ হাইটেক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, সাগর ইনফো বিল্ডার্স লিমিটেড, জে এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স এম এ ইঞ্জিনিয়ারিং, হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড, মোহাম্মদ আমিনুল হক (প্রাই.) লিমিটেড, মেসার্স জামান এন্টার প্রাইজ, এমডি মইনুদ্দিন (বাসি) লিমিটেড, রানা বিল্ডার্স, মেসার্স আল আমিন ট্রেডার্স, মেসার্স হাসমত এন্ড ব্রাদার্স, মেসার্স ভুইয়া কনস্ট্রাকশন, মেসার্স মীর ব্রাদার্স, কংক্রিট এন্ড স্টিল টেকনোলজি লিমিটেড, মেসার্স করিম এন্ড কোং, মেসার্স সরদার এন্টারপ্রাইজ, ভাওয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, মো. খুরশাদুজ্জামান, নবারুন ট্রেডার্স লিমিটেড, মোজাহার এন্টারপ্রাইজ, মোহাম্মদ আমিনুল হক লিমিটেড, নূর জামান ইঞ্জিনিয়ারিং ফাউন্ডেশন, ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং, মেসার্স,সেলিম এন্ড ব্রাদার্স, মাসুদ স্টিল ডিজাইন লিমিটেড, স্পার্ক ভিশন লিমিটেড, মেসার্স এবি কনস্ট্রাকশন, আবেদ মনসুর কনস্ট্রাকশনস, তাহের ব্রাদার্স লিমিটেড, এম এ জহির লিমিটেড, তমা কনস্ট্রাকশন এন্ড কোং, আব্দুল মোনেম লিমিটেড, মেসার্স রিয়াসাত এন্ড ব্রাদার্স, মোহাম্মদ ইউনূস এন্ড ব্রাদার্স, এসএইচকে কনস্ট্রাকশন, মেসার্স দি ইঞ্জিনিয়ারিং সিন্ডিকেট, এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা লিমিটেড, মেসার্স সয়েল এন্ড ফাউন্ডেশন ইঞ্জিনিয়ারিং।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। কিন্তু কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী বিভিন্ন ভাবে এই খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরকে আদর্শ ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান তারা।
তাদের দাবিগুলো হলো- সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঘুষ ও দুর্নীতি বন্ধ করা; দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীদের অপসারণ; আওয়ামী সরকারের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদেরকে অনৈতিক সুবিধা দেয়ার জন্য অযৌক্তিকভাবে অভিজ্ঞ ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে নেয়া বে-আইনিভাবে অযোগ্য ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত বাতিল করা; সাবেক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ বঙ্গবন্ধু ইঞ্জিনিয়ারিং পরিষদ নেতা পকিউরমেন্ট সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদকে (ম্যাক আজাদ) অপসারণ; গত এক বছর যাবত শুদ্ধি অভিযানের নামে যে অশুদ্ধি অভিযান চলেছে তা বাতিল করা; কোন দলীয় ক্ষমতা বা দুর্নীতির মাধ্যমে কাজ নিয়ে কোন রকম বৈষম্য না করে যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ দিতে হবে; জিওবি ফান্ড টেন্ডার এ প্রাইস এডজাস্টমেন্ট পদ্ধতি চালু করা; গত এক বছরে প্রায় ৪৭ জন প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদারকে বেআইনিভাবে অযোগ্য ঘোষণা করে বিগত সরকারের ঘনিষ্ঠদের কাজ দেয়ার জন্য পিপিআর-২০০৮ এর শর্ত শিথিল করে যে কাজ দেয়া হয়েছে তা বাতিল করা। কারণ সেই কাজগুলোতে কোন প্রতিযোগিতা না থাকায় সরকারের অনেক বেশি অর্থ লোপাট হয়েছে এছাড়া ‘সিমিলার নেচার/স্পেসিফিক অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট’ একটির জায়গায় তিনটি ছোট সার্টিফিকেট দিয়ে শর্ত পূরণ করা যা দরপত্রের পিপিআর-২০০৮ এর শর্তের বাইরে এবং বর্তমানে আহ্বান করা চলমান দরপত্র জরুরি ভিত্তিতে স্থগিত করতে হবে, কেননা পিপিআর-২০০৮ শর্ত ভঙ্গ করে কোন দলপত্র আহবান করা যাবে না; এবং ওটিএম টেন্ডারের ক্ষেত্রে পয়েন্ট পদ্ধতি বাতিল করা। ঠিকাদার সমন্বয়ক কমিটির কয়েকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান ব্যবসায়ীদের আসলে কোন দল নেই ; সব আমলেই তারা যোগ্যতা অনুযায়ী সমানভাবে ব্যবসা করবে। এবং এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথেই কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর পাশাপাশি কিছু বহিরাগত নিজেকে সরকারদলীয় দাবি করে উড়ে এসে জুড়ে বসার এবং প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে ; এবং দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারি ব্যবসার সাথে জড়িত অভিজ্ঞ এঠিকাদারদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা চালায়। যা দুঃখজনক। আমরা এসবের প্রতিকার চাই।
