ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী অংশের কিছু স্থানে পানি উঠে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ কেউ সেখানে আট থেকে ১০ ঘণ্টা ধরে আটকা আছেন। খাবারের অভাবে বাসে আটকেপড়া শিশুরা কাঁদছে।
ভুক্তভোগী কারও কারও ভাষ্য অনুযায়ী, এই মহাসড়কে প্রায় ৫০ কিলোমিটারের মত এলাকায় যানজট দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ফেনীর লালপোল এলাকায় ঢাকাগামী বাসে থাকা কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
যাত্রীরা জানিয়েছেন, তারা ভয়ানক বিপদের মধ্যে পড়েছেন। যেখানে বাস থেমে আছে, সেখানে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। আশপাশে কোথাও কোনো খাবারের দোকান নেই। বাস থেকেও নামতে পারছেন না।
বিশেষ করে শিশুদের অবস্থা খুব খারাপ। অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কিন্তু তাদের চিকিৎসা বা সহায়তা দেওয়ার মত কোনো পরিস্থিতি নেই। বাবা-মা অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছেন।
কুমিল্লার বাসিন্দা আব্দুর রহমান সকালে কক্সবাজার থেকে রওনা হয়েছেন। বিকাল ৪টার দিকে তিনি ফেনীর লালপোল এলাকার লেমুয়া ওভারব্রিজের কাছে এসে আটকা পড়েন।
রাত সাড়ে ১২টায় তিনি বলেন, “মহাসড়কে পানির কারণে বাস থেকে বিকাল ৪টায় এসে থেমে গেছে। সামনে আরও অনেক বাস। সাড়ে আট ঘণ্টাও একটু নড়েচড়েনি। পানি বাড়তে বাড়তে কোমর সমান হয়ে গেছে। প্রাইভেট কার প্রায় ডুবে যায় অবস্থা।
“বাসে বাচ্চারা আছে। তাদের সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে। অনেক শিশু ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদছে। কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছে।”
আব্দুর রহমান বলছিলেন, তিনি যে বাসে আছেন সেই বাসে মীরসরাই ও বারইয়ারহাট থেকে বন্যা দুর্গত পাঁচটি পরিবার উঠেছে। তারা নিরুপায় হয়েই উঠেছে। তাদের বাড়িঘর ডুবে গেছে। রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছিল। চালককে বলে তাদের তুলে নেওয়া হয়েছে।
“এদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও আছে। গৃহিনী তারিন আক্তার তার আড়াই বছরের শিশুকে নিয়ে বাসে উঠেছিলেন। রাত ১০টা পর্যন্ত শিশুটির বাবা-মা নানা কথা বলে চুপ করিয়ে রাখতে পেরেছেন। কিন্তু তারপর থেকেই শিশুটি ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদছে।”
