সোমবার, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫
 শিরোনাম
বিশেষ সুরক্ষা দেওয়া হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া যোদ্ধাদের ১৪ ডিসেম্বর বিচারাঙ্গনে বিদায়ী বক্তব্য রাখবেন প্রধান বিচারপতি বিজয় দিবস উদযাপনে তিন বাহিনীর সমন্বয়ে ফ্লাইপাস্ট-প্যারাজাম্প বিজয় দিবস পালন নিয়ে কেন্দ্র থেকে দেওয়া নির্দেশনা ৫ মিনিটের ব্যবধানে সিলেটে দুটি মৃদু ভূমিকম্প জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা আজ সন্ধ্যায় নির্বাচনী শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ প্রস্তাব ইসির বিজয় দিবস উদযাপনের আগে জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রবেশ নিষিদ্ধ বিয়ে ও তালাকের ডিজিটাল নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ হাইকোর্টের দূষণ রোধে বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক চুক্তির দাবিতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান

গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হচ্ছে আজ রোববার সকাল থেকে

গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হচ্ছে আজ রোববার সকাল থেকে

আজ রোববার সকাল থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতায় সহায়তাকারী কাতারের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এর মধ্য দিয়ে গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের অবসান হতে যাচ্ছে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আটক সকল জিম্মিকে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

জেরুজালেম থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

দীর্ঘ ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ এবং ভয়াবহ বোমাবর্ষণের অবসান ঘটাতে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি করা হয়েছে, তবে শনিবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, প্রয়োজনে যুদ্ধে ফিরে যাওয়ার জন্য মার্কিন সমর্থন  রয়েছে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়টি ৪২ দিন স্থায়ী হবে এবং এ সময় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন তাদের হাতে বন্দি থাকা ৩৩  জন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে, যাদের মধ্যে তিনজনকে রোববার মুক্তি দেয়া হবে। ইসরাইল শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে এবং দেশে ফেরত পাঠাবে। 

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারী এক বিবৃতিতে বলেন, চুক্তির পক্ষ এবং মধ্যস্থতাকারীদের সমন্বয়ে করা গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি শুরু হবে রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে।

যুদ্ধবিরতির প্রাক্কালে গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত ছিল, গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে খান ইউনিসে তাদের তাঁবুতে হামলায় এক পরিবারের কমপক্ষে পাঁচজন সদস্য নিহত হয়েছেন।

ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের জন্য ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর সময় জেরুজালেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

হুথিরা জানিয়েছে যে তারা তেল আবিবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে লক্ষ্য করে এবং লোহিত সাগরের বন্দর শহর ইলাতে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

রোববার তারা লোহিত সাগরে আমেরিকার একটি বিমানবাহী রণতরীকে লক্ষ্যবস্তু করে এবং যুদ্ধবিরতির সময় কোনও প্রতিশোধ নেওয়া হলে পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করেছে।

হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে মাত্র এক সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। সেই চুক্তিতে ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়ে জঙ্গিদের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি দিতে দেখা গিয়েছিল।

নেতানিয়াহু বলেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার মাধ্যমে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিয়েছে।

রোববার থেকে শুরু হওয়া ৪২ দিনের প্রথম পর্যায়ের যুদ্ধবিরতিকে ’অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি’ বলে অভিহিত করেছেন নেতানিয়াহু।

তিনি বলেন, যদি আমাদের যুদ্ধ পুনরায় শুরু করতে বাধ্য করা হয়, তাহলে তারা শক্তি প্রয়োগ করে আবার  হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে হুঁশিয়ারি দেন।

কিন্তু হামাস বলেছে,  ইসরাইল তার আক্রমণাত্মক লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে এবং 'কেবল মাত্র মানবতার মর্যাদাকে অবমাননা করে এমন যুদ্ধাপরাধ সংঘটনে সফল হয়েছে’।

ইসরাইলের বিচার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চুক্তির প্রথম পর্যায়ে ৭৩৭ জন ফিলিস্তিনি বন্দী এবং আটক ব্যক্তিকে মুক্তি দেয়া হবে - রোববার বিকেল ৪:০০ টা (১৪০০জিএমটি)-র আগে কেউ মুক্তি পাবে না।

এএফপির ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে হামাসের হামলায় ১,২১০ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরাইলে হামলা চালিয়ে ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এসব জিম্মির মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় এখনো ৯৪ জন রয়ে গেছেন, যাঁদের ৩৪ জন মারা গেছেন বলে মনে করে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

ইসরাইলির প্রতিশোধমূলক হামলায় গাজার বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ৪৬,৮৯৯ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। 

জাতিসংঘের মতে, হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, এটি নির্ভরযোগ্য।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের প্রাক্কালে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।

শনিবার মার্কিন নেটওয়ার্ক এনবিসিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন যে তিনি নেতানিয়াহুকে বলেছেন, ‘যুদ্ধ শেষ করতে হবে’। ‘আমরা চাই এটি শেষ হোক।’