মঙ্গলবার, নভেম্বর ১১, ২০২৫
 শিরোনাম
ডিএমপির ৫ এডিসিকে বদলি করা হয়েছে রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকলেন তারেক রহমান কক্সবাজার সৈকতের ভাঙন রোধে ৬২৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত সেবাগ্রহীতার বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার করলে নেয়া হবে কঠোর পদক্ষেপ শহীদ মিনারে তৃতীয় দিনেও চলছে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি হাজিরা দিতে এসে খুন হলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন জাতীয় ঈদগাহে বহিরাগতদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা অতীতের কলঙ্ক ঘোচাতে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই: ইসি আনোয়ারুল চট্টগ্রাম বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে নিতে বিদেশি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন: নৌপরিবহন উপদেষ্টা প্লট বরাদ্দে জালিয়াতি মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ

মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা গাজায় গণহত্যা ও যৌন সহিংসতার প্রমাণ পেয়েছেন

মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা গাজায় গণহত্যা ও যৌন সহিংসতার প্রমাণ পেয়েছেন

গাজায় নারীর স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ চালিয়েছে এবং যৌন সহিংসতাকে যুদ্ধ কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছে ইসরাইল। 

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা এসব অভিযোগ করেছেন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রজনন ক্ষমতা আংশিকভাবে ধ্বংস করেছে এবং জন্মনিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছে, যা রোম সংবিধি ও গণহত্যা কনভেনশনে গণহত্যার একটি বিভাগ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। 

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এটি পক্ষপাতদুষ্ট ও ইহুদিবিরোধী। 

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরিবর্তে জাতিসংঘ আবারও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ইসরাইল রাষ্ট্রকে আক্রমণ করেছে।

জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশন বলেছে, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রজনন ক্ষমতা আংশিকভাবে ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে রয়েছে জন্মনিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া, যা গণহত্যার একটি শর্ত। কমিশন বলেছে, চিকিৎসা সরবরাহে বাধার কারণে মাতৃমৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়াও মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্তর্ভুক্ত। 

প্রতিবেদনে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের নেতৃত্বে দক্ষিণ ইসরাইলে হামলার পর ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী ফিলিস্তিনিদের শাস্তি দেওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক প্রকাশ্য নগ্নতা ও যৌন সহিংসতাকে তাদের আদর্শ কার্যপদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করেছে। 

ইসরাইল এই অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে। জেনেভায় জাতিসংঘে ইসরাইলের স্থায়ী মিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) নির্দিষ্ট নির্দেশিকা ও নীতি রয়েছে, যা এই ধরনের অপকর্মকে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করে। তারা আরও বলেছে যে, তাদের পর্যালোচনা প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। 

২০২৪ সালের জুনে প্রকাশিত কমিশনের একটি পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছিল। গত বছরের মার্চে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের একটি দল বলেছিল যে, হামাসের হামলার সময় বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণসহ যৌন সহিংসতা ঘটেছে বলে বিশ্বাস করার যৌক্তিক কারণ রয়েছে। 

ইসরাইল গণহত্যা কনভেনশনের সদস্য এবং ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশনা পেয়েছে যে, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় গণহত্যার কাজ প্রতিরোধ করতে হবে। তবে ইসরাইল রোম সংবিধির সদস্য নয়, যা আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ব্যক্তিগত মামলাগুলোতে রায় দিতে সক্ষম করে। 

প্রতিবেদনে ইসরাইলের নিরাপত্তা বাহিনীকে ২০২৩-এর অক্টোবরে দক্ষিণ ইসরাইলে হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলার পর ফিলিস্তিনিদের শাস্তি দেওয়ার জন্য তাদের অভিযানের মধ্যে জনসমক্ষে জোরপূর্বক নারীদের বিবস্ত্র করা ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়েছে।

চলতি সপ্তাহে জেনেভায় কমিশন কর্তৃক আয়োজিত একাধিক শুনানির সময়, গাজার একজন নার্স ইসরাইলি বাহিনী তাকে অপহরণ করার পর তাকে প্রকাশ্যে অন্তর্বাস খুলে ফেলতে বাধ্য করার অভিযোগ করেছে । বন্দি অবস্থায় তাকে যৌন নিপীড়ন ও অত্যাচার করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে ইসরাইল এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।